সারা বিশ্বের অধিকাংশ দেশে করোনা এখন কমবেশি ছড়িয়ে পড়েছে। টিকা আসতে আরো অনেক সময় বাকী। মানুষও তাদের দৈনন্দিন কাজে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছে। কেউ মাস্ক পড়ছে কেউ পড়ছেনা ( বিশেষত শ্রমজীবীরা আর কতিপয় তরুণেরা)। কাকে যে কখন করোনা আক্রমণ করে বসবে তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ বলতে পারবেন না। যতই ঘরে থাকুন বা সুরক্ষাসমগ্রী পড়ুন। তারপরও Preventive is better than cure. সেই ক্ষেত্রে আমার উপদেশঃ
১. প্রতিদিন বারান্দায় বা ছাদে ভোরের রোদটুকু গায়ে মেখে হাটুন ৪০ মিনিট ( সম্ভব হলে)।
২.দু’ তিন বেলা গরম লবন জলে গড়গড়া করুন।
৩. সহনীয় মাত্রায় দুগ্লাস, না পারলে অন্তত এক গ্লাস খালি পেটে গরম জল খেয়ে ৪৫ মিনিট কিছু খাবেন না।
৪. এই ফাঁকে ফ্রী হ্যান্ড ব্যায়াম করুন, অন্তত আধঘন্টা।
৫. হার্টের সমস্যা না থাকলে প্রাণায়াম ব্যায়াম করুন।
৬. ভাল করে সাবান দিয়ে প্রতিদিন গোসল করুন এবং নিজেই নিজের পরনের জামাকাপড়, গামছা/ তোয়ালে কাপড় কাঁচা সাবান বা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধূয়ে ফেলুন।
৭. প্রতিদিন দেশজ ফল, বিশেষত টক জাম্বুরা লেবু, মোসাম্বিক জাতীয় খাবার খালিপেটে খাবেন।
৮. যার যার নির্ধারিত ওষুধ নিয়মিত খাবেন।
৯. ব্রেকফাষ্ট করবেন পরিমানমত।
১০. গ্রীন টি লং, গুলমরিচ, তেজপাতা, লেবু বা আদা দিয়ে বার বার করে খাবেন।
১১. ডিম খাবেন দুটো, সম্ভব না হলে একটা।
১২. দুপুরে ভাত কম খেয়ে মাছ মাংস সব্জী ইত্যাদি বেশি বেশি খাবেন।
১৩.রাতে তরকারি দিয়ে রুটি খাবেন।
১৪. এক গ্লাস গরম দুধ খাবেন ( ল্যকটোজ প্রবলেম যাদের নেই।
১৫. ভুলেও ঠান্ডা কিছু খাবেন না
১৬. ঘুম থেকে উঠে এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে যার যার সৃষ্টিকর্তার নাম স্মরণ করবেন।
আর করোনার লক্ষণ, যেমন প্রচন্ড জ্বর অনুভূত হওয়া অথচ থার্মোমিটার দিয়ে মাপলে বড়জোর ১০০ বা ১০১ ডিগ্রি তাপমাত্রা, গা জ্বালা করা, মাথা বা ঘাড় ব্যথা ( অনেকের এসব না ও হতে পারে) , শুকনো কাশি অর্থাৎ কফ বেরুবে না। এরকম হলে তিন দিন অপেক্ষা করবেন, কোন ওষুধ খাবেন না। তবে গরম লবনজলে গড়গড়া করবেন, লেবু চা খাবেন। তারপরও ও না কমলে অবশ্যই টেষট করাবেন। তারপর পজিটিভ রেজাল্ট এলে, বয়স যদি ৫০ বা ততোধিক হয়, ডায়বেটিস, প্রেশার, শ্বাসকষ্ট, সিওপিডি ইত্যাদি থাকে তবে দেরী না করে সর্বাগ্রে চেষ্টা করবেন সেন্টাল অক্সিজেন আছে এমন সরকারি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হতে। সিট না পেলে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হবেন। কারণ ম্যনেজমেন্ট গোড়াতেই শুরু করলে বেঁচে যাবেন। রোগ গাঢ় হয়ে গেলে জটিলতা বেড়ে যাবে। ভর্তি হয়ে , দু’ চারদিনের মাথায় চেষ্ট এক্সরে, রক্তের টেষ্ট এবং বুকের সিটি স্ক্যান যত তারাতাড়ি করিয়ে ফেলবেন। যদি রিপোর্ট গুলো ভাল আসে তাহলে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করবেন এবং ত্যাগ করার আগে আরেকবার টেষ্ট করাবেন। তারপর ডাক্তার থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও পরামর্শ নিয়ে বাসায় এসে ১৪ দিন আইসোলেসনে থাকবেন। কারন আপনার করোনা না হলেও করোনা রোগীর বিছানা, বালিশ, নার্স,আয়া, ডাক্তার দ্বারা আপনি exposed হয়েছেন। এবং বাসায় দরজা বন্ধ করে রাখবেন। কেউ এলে মাস্ক দুজনেই পড়বেন। আর নিয়মিত ওষুধ, পথ্য খাবেন।
ভাল থাকুন, করোনা কে পরাজিত করুন।
ধন্যবাদ।
মানিক চন্দ্র দে
করোনাজয়ী।
Leave a Reply